স্বর্ণ বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি জনপ্রিয় অলংকার এবং মূল্যবান বস্তু। এটি ঐতিহ্য, সৌন্দর্য এবং বিনিয়োগের প্রতীক। বিশেষ করে ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ গহনা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। তবে, স্বর্ণের দাম ক্রমাগত ওঠানামা করে, তাই সঠিক সময়ে সঠিক দামে স্বর্ণ কেনা গুরুত্বপূর্ণ।
সোনার দামের ওঠানামা অর্থনীতির বিভিন্ন সূচককে প্রভাবিত করে। তাই সোনার দাম জানা অনেকেরই জন্য জরুরি, বিশেষ করে যারা স্বর্ণ কিনতে বা বিক্রি করার পরিকল্পনা করছেন। আজকের ব্লগ পোস্টে, ২২ ক্যারেট স্বর্ণের মে মাসের মূল্য ফোকাস করা হবে।
২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম (৭ মার্চ, ২০২৫)
স্বর্ণের পরিমাণ | স্বর্ণের দাম |
---|---|
১ ভরি | ১,৩৯,৪৪১ টাকা |
১ আনা | ৮,৭১৫.০৫ টাকা |
১ রতি | ১,৪৫২.৫ টাকা |
১ গ্রাম | ১১,৯৫৫ টাকা |
অন্যান্য | |
২১ ক্যারেট স্বর্ণের দাম প্রতি ভরিতে | ১,৩৩,০৯৬ টাকা |
১৮ ক্যারেট স্বর্ণের দাম প্রতি ভরিতে | ১,১৪,০৮৪ টাকা |
পুরাতন সোনা প্রতি ভরি | ৯৩,৬৭২ টাকা |
তথ্যের সূত্র: বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি
২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম প্রতি ভরিতে কত?
আজকের বাজার দর অনুযায়ী ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম প্রতি ভরিতে কত তা উপরের চার্টে দেওয়া আছে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
- স্বর্ণের মূল্য প্রতিদিন পরিবর্তিত হতে পারে।
- এটি আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য, স্থানীয় চাহিদা ও সরবরাহ, এবং সরকারি করের ওপর নির্ভর করে।
- উপরে উল্লিখিত মূল্যটি প্রায়শই বিভিন্ন দোকানে একই রকম থাকলেও, সামান্য ওঠানামা থাকতে পারে।
- স্বর্ণ কিনে নেওয়ার আগে কয়েকটি দোকানের মূল্য তুলনা করা ভালো।
কিভাবে খাঁটি সোনা চিনবেন?
সোনা একটি মূল্যবান ধাতু যা শতাব্দী ধরে গয়না, মুদ্রা এবং অন্যান্য আলংকারিক জিনিসপত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে, বাজারে নকল সোনারও প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।
আপনি কিভাবে নিশ্চিত হবেন যে আপনি যে সোনা কিনছেন বা রাখছেন তা আসল?
চিন্তা করবেন না, কারণ এখানে কিছু টিপস দেওয়া হল যা আপনাকে খাঁটি সোনা চিনতে সাহায্য করবে:
১. হলমার্ক পরীক্ষা করুন: আসল সোনার গয়না বা সোনার বারে একটি হলমার্ক থাকে যা সোনার বিশুদ্ধতা নির্দেশ করে। বাংলাদেশে, সোনার হলমার্কিং বাধ্যতামূলক এবং বিভিন্ন ক্যারেটের জন্য নির্ধারিত চিহ্ন রয়েছে। বাংলাদেশে ব্যবহৃত হলমার্ক চিহ্নগুলো হলো:
২৪ ক্যারেট: ৯৯৯
২২ ক্যারেট: ৯১৬
২১ ক্যারেট: ৮৭৫
১৮ ক্যারেট: ৭৫০
২. চুম্বক পরীক্ষা: সোনা একটি অ-চৌম্বকীয় ধাতু, যার মানে হল চুম্বক এটিকে আকর্ষণ করবে না। আপনি যদি সোনার একটি টুকরোকে চুম্বকে ধরে টেনে দেখেন এবং এটি আকর্ষিত হয়, তাহলে এটি সম্ভবত নকল।
৩. ঘনত্ব পরীক্ষা: সোনা একটি ঘন ধাতু। আপনি যদি সোনার একটি টুকরোকে পানিতে ডুবিয়ে দেখেন এবং এটি একটি নকল ধাতুর তুলনায় অনেক বেশি ওজন বোধ করে, তাহলে এটি সম্ভবত আসল।
৪. অ্যাসিড পরীক্ষা: এই পরীক্ষাটি ঘরে করা উচিত নয় কারণ এটি বিপজ্জনক রাসায়নিক জড়িত। তবে, এটি খুবই নির্ভুল এবং একজন অভিজ্ঞ জুয়েলার এটি সোনার আসলতা নির্ধারণ করতে ব্যবহার করতে পারেন।
৫. কামড় পরীক্ষা: এটি একটি পুরনো পদ্ধতি যা খুব একটা নির্ভরযোগ্য নয়, তবে এটি দ্রুত পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। সোনার একটি ছোট অংশে হালকা কামড় দিন। যদি দাগ থাকে, তাহলে এটি সম্ভবত নকল।
মনে রাখবেন, এই পরীক্ষাগুলি কেবলমাত্র নির্দেশিকা হিসাবে ব্যবহার করা উচিত। সোনার আসলতা নিশ্চিত করার সর্বোত্তম উপায় হল একজন বিশ্বস্ত জুয়েলারের কাছে এটি পরীক্ষা করা।
কোন সোনাতে সবচেয়ে কম খাদ থাকে?
সবচেয়ে কম খাদ থাকে ২৪ ক্যারেট সোনাতে। এই সোনাকে শুদ্ধ বা খাঁটি সোনাও বলা হয়। ২৪ ক্যারেট সোনায় মোট ৯৯.৯% সোনা থাকে এবং বাকি ০.১% অন্যান্য ধাতু যেমন রূপা, তামা, প্ল্যাটিনাম ইত্যাদি।
তবে, ২৪ ক্যারেট সোনা খুব নরম এবং নমনীয় হয়, তাই এটি দৈনন্দিন গয়না তৈরির জন্য উপযুক্ত নয়। গয়না তৈরির জন্য সাধারণত ১৮ ক্যারেট থেকে ২২ ক্যারেট সোনা ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশের সোনার মূল্য কে নির্ধারণ করে?
বাংলাদেশের সোনার মূল্য বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) দ্বারা নির্ধারিত হয়। এই সমিতিটি দেশের সকল স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করে এবং প্রতিদিন সকালে আন্তর্জাতিক বাজারের দামের উপর ভিত্তি করে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করে।
বাজুস কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করে সোনার দাম নির্ধারণ করে, যার মধ্যে রয়েছে:
আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম: এটি সোনার দাম নির্ধারণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম যখন বাড়ে, তখন বাংলাদেশের বাজারেও দাম বাড়ে।
মার্কিন ডলারের মূল্য: সোনার দাম মার্কিন ডলারের সাথে বিপরীতভাবে সম্পর্কিত। যখন মার্কিন ডলারের মূল্য বেড়ে, তখন সোনার দাম কমে।
স্থানীয় বাজারে চাহিদা ও সরবরাহ: স্থানীয় বাজারে সোনার চাহিদা বেশি থাকলে এবং সরবরাহ কম থাকলে দাম বাড়তে পারে।
বিজেএস দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সোনার জন্য আলাদা আলাদা দাম নির্ধারণ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ঢাকায় সোনার দাম সাধারণত চট্টগ্রামের তুলনায় বেশি হয়।
আপনি বাজুস-এর ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সোনার সর্বশেষ দাম পেতে পারেন।
আশা করি এই তথ্য আপনার জন্য উপযোগী হবে। স্বর্ণের বাজারের সর্বশেষ তথ্যের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ রাখুন!
অসাধারণ একটি বিষয় নিয়ে আর্টিকেল লিখেছেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে হোয়াটসয়াপ বিডি এর পক্ষ্য থেকে।